তিলাওয়াতের সেজদা তিলাওয়াত করার সাথে সাথে সেজদা করা:

কুরআন তিলাওয়াতের নিয়ম হল, যখন তিলাওয়াত করবে, সেজদা করবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে করীমে নবী ও সালে-হীনদের এ বলে, প্রশংসা করেন,
﴿إِذَا تُتۡلَىٰ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُ ٱلرَّحۡمَٰنِ خَرُّواْۤ سُجَّدٗاۤ وَبُكِيّٗا۩ ٥٨﴾ [مريم: ٥٨]   
“যখন তাদের কাছে পরম করুণাময়ের আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তারা কাঁদতে কাঁদতে সেজদায় লুটিয়ে পড়ত”।[73] আল্লামা ইবনে কাসীর রহ. বলেন, এখানে উপরোক্ত ক্রন্দন ও সেজদাকারীদের অনুসরণ ও তদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সাজদাহ করার বিষয়ে আলেমগণ একমত।[74]
সালাতের মধ্যে তিলাওয়াতের সেজদা করা বড়ই মহৎ কাজ। এতে সালাতের মধ্যে মনোযোগ ও খুশু বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿وَيَخِرُّونَ لِلۡأَذۡقَانِ يَبۡكُونَ وَيَزِيدُهُمۡ خُشُوعٗا۩ ١٠٩﴾ [الاسراء: ١٠٩]   
‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং তা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে’।[75]
তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত তিনি সালাতে সূরা নজম তিলাওয়াত করে সেজদা করছেন।
আর ইমাম বুখারি স্বীয় সহীহে আবু রাফে থেকে বর্ণনা করেন,  তিনি বলেন, আমি আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু সাথে এশারের সালাত আদায় করি, তিনি তখন সালাতে
﴿إِذَا ٱلسَّمَآءُ ٱنشَقَّتۡ ١﴾ [الانشقاق: ١]   
তিলাওয়াত করেন এবং সেজদা করেন। আমি তাকে সেজদা করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন, আমি আবুল কাশেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে, সেজদা করেছি, সুতরাং আমি সব সময় সেজদা করতে থাকবো যতদিন পর্যন্ত তার সাথে আমার সাক্ষাত না হয়। [বুখারি, কিতাবুল আযান, এশারের সালাতে কিরাত জোরে পড়া বিষয়ে আলোচনা।]
মোটকথা, সালাতের মধ্যে তিলাওয়াতে সেজদাকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। সালাতে তিলাওয়াতের সেজদা আদায় করা দ্বারা শয়তানকে অপমান অপদস্ত করা ও তাকে কাঁদানো হয়। ফলে সালাতে তিলাওয়াতের সেজদা আদায় করা, মুসল্লিদের ধোঁকা দেয়া হতে শয়তানকে দুর্বল করে দেয়।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু’ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إذا قرأ ابن آدم السجدة، اعتزل الشيطان يبكي، يقول : يا ويله، أمر بالسجود فسجد، فله الجنة، وأمرت بالسجود فعصيت، فلي النار»  
“যখন আদম সন্তান সেজদার আয়াত পড়ে সেজদা করে, তখন শয়তান কাঁদতে কাঁদতে দূরে সরে যায় এবং বলে, হে আমার দুর্ভোগ! আদম সন্তানকে সেজদা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তখন সে সেজদা করছে, ফলে তার জন্য রয়েছে, জান্নাত। আর আমাকে সেজদা করার নির্দেশ করা হয়েছে, আমি তা অমান্য করছি, ফলে আমার জন্য রয়েছে জাহান্নাম”[76]