সালাতে খুশুর বৈশিষ্ট্য

তন্মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে,
·         রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ما من امريء مسلم تحضره صلاة مكتوبة فيحسن وضوءها وخشوعها وركوعها ، إلا كانت كفارة لما قبلها من الذنوب ما لم تؤت كبيرة ، وذلك الدهر كله»
কোনো মুসলিম যখন কোনো ফরয সালাতে উপস্থিত হয় এবং সুন্দর করে ওজু করে এবং সুন্দর করে রুকু-সেজদা করে, তখন সেটা তার জন্য তার অতীতের গুনাহগুলোর কাফফারা হিসেবে গণ্য করা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহ না করে। আর এটি সব সময়ের জন্য”[95]
·         সালাতের সাওয়াব নির্ধারিত হয় বান্দার খুশু অনুযায়ী যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إن العبد ليصلي الصلاة ما يُكتب له منها إلا عشرها ، تسعها ، ثمنها ، سبعها ، سدسها ، خمسها ، ربعها ، ثلثها ، نصفها »
“নিশ্চয় বান্দা সালাত আদায় করে, অথচ তার সে সালাতের সাওয়াব তার জন্য লেখা হয়, শুধু এক দশমাংশ, এক নবমাংশ, এক অষ্টমাংশ, এক সপ্তমাংশ, এক ষষ্ঠাংশ, এক পঞ্চমাংশ, এক চতুর্থাংশ, এক তৃতীয়াংশ ও অর্ধেক”[96]
·         মুসল্লি সালাতের ততটুকু সাওয়াব পাবে, যতটুকু সে বুঝতে পারবে। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু’ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
 «ليس لك من صلاتك إلا ما عقلت منها »
“তোমার সালাত হতে তুমি ততটুকু পাবে, যতটুকু তুমি বুঝতে পারবে”
·         যখন কেউ পরিপূর্ণ খুশু ও ভালোভাবে সালাত আদায় করে, তখন তার গুনাহ ও পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إن العبد إذا قام يصلي أُتي بذنوبه كلها فوضعت على رأسه وعاتقيه فكلما ركع أو سجد تساقطت عنه» 
“যখন কোন বান্দা সালাতে দাড়ায়, তখন তার সমস্ত গুনাহকে উপস্থিত করা হয় এবং গুনাহগুলো তার মাথা ও গাড়ের উপর রাখা হয়। তারপর যখন রুকু করে এবং সেজদা করে তখন তার গুনাহসমূহ ঝরে যায়”[97] আল্লামা মুনাবী রহ. বলেন, “অর্থাৎ যখন বান্দা কোনো একটি রুকন আদায় করে, তখন গুনাহের একটি রুকন ঝরে যায়। যখন সালাত পুরা করে, তখন গুনাহগুলোও পুরোপুরি ঝরে যায়। আর এটি এমন সালাত সম্পর্কে যে সালাতে একজন মুসল্লি সালাতের শর্ত, রুকু-সেজদা, আরকানসমূহ ও খুশু‘ তথা বিনয়াবতভাবে আদায় করে। যেমন বুঝা যায়, হাদিসে ‘আবদ’ ও ‘কিয়াম’ শব্দদ্বয় উল্লেখ করা দ্বারা। কারণ, এতে ইঙ্গিত রয়েছে যে, লোকটি যিনি সমস্ত বাদশাহর বাদশাহ, তার সামনে দাঁড়িয়েছে একজন অপদস্ত গোলামের মত হয়ে।[98]
·         সালাতে মনোযোগী ব্যক্তি যখন সালাত সম্পন্ন করেন, তখন তিনি মনে এক প্রকার স্বস্তি পান এবং তিনি যেন তার মাথা থেকে অনেকগুলো বোঝা নামিয়ে রাখছেন এ রকম অনুভূতি লাভ করেন। ফলে তার মধ্যে কর্ম চাঞ্চল্যটা আরাম ও প্রাণ ফিরে আসে। এমনকি সে আশা করতে থাকে যদি সালাত হতে বের না হত; কারণ, সালাত তার চোখের শীতলতা, তার আত্মার খোরাক, তার আত্মার বাগান ও দুনিয়াতে তার আরামের স্থান। সালাতের বাইরে সর্বদা সে যেন বন্দীশালা ও অস্বস্তির মধ্যে আছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে আবার সালাতে ফিরে না যায়। ফলে সে সালাতে আরাম পায়, সালাত থেকে পালিয়ে বেড়ায় না, (সালাতের বাহিরে তার কোন শান্তি নেই) যারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারা বলেন, আমরা সালাত আদায় করি এবং সালাত দ্বারা আরাম পাই। যেমন, তাদের ইমাম ও অনুকরণীয় ব্যক্তি, তাদের নবী বলেন,  «يا بلال أرحنا بالصلاة»হে বেলাল, আমাকে সালাতের মাধ্যমে শান্তি দাও। এ কথা বলেন নি যে, সালাত থেকে আমাকে শান্তি দাও।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, «جعلت قرة عيني بالصلاة»  “আমার চোখের প্রশান্তি নির্ধারণ করা হয়েছে সালাতের দ্বারা”। যার চোখের শীতলতা ও আত্মার প্রশান্তি হল সালাত, তার চোখ কিভাবে সালাত ছাড়া প্রশান্তি লাভ করতে পারে এবং সে কীভাবে সালাত ছাড়া ধৈর্য ধারণ করতে পারে?[99]