কোনো অপরাধী তার অপরাধ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা বৈধ হওয়ার বিষয়টি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ কা‘আব ইব্ন মালেক এবং তার সাথীদের সাথে পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত সম্পর্ক ছিন্ন রাখেন, আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল না করা পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তাদের সাথে কোন কথা-বার্তা বলেন নি।
যয়নব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’, সুফিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’ কে ইয়াহূদী বলে সম্বোধন করলে প্রায় দুই মাস পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। অনুরূপভাবে এক লোক বিনা প্রয়োজনে একাধিক ঘর নির্মাণ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ সে ঘর ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে না দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কোনো প্রকার কথা-বার্তা বলেন নি। এক লোক তার দেহকে যা‘ফরান দ্বারা রঙ করলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তা ধুয়ে তার দাগ না উঠানো পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা পরিহার করেন।
এক লোককে রেশমের জুব্বা পরিধান করতে দেখে, তা খুলে ফেলে দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
এক লোককে স্বর্ণের আংটি পরিধান করতে দেখে, তা খুলে ফেলে দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
সূনানে আবু-দাউদ, তিরমিযী ও মুস্তাদরাকে হাকেমে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে দুটি লাল কাপড় পরিধান করছে। এ কারণে তিনি তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
অনুরূপভাবে সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণ যারা যাদের থেকে গুনাহ প্রকাশ পায়, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের তাওবা কবুল না হত বা তাদের তাওবা প্রকাশ না পেত, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দিতেন। আল্লামা ইবনু আব্দিল কাওয়ী রহ. বলতেন,
وهجران من أبدى المعاصي سنة
وقيل إذا يردعه أوجب واكد
وقيل على الإطلاق ما دام معلنا
ولاقه بوجه مكفهر معربد
অর্থ: যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে অপরাধ করে, তার সাথে সম্পর্ক ছেড়ে দেয়া সুন্নত। কেউ কেউ বলেন, তা যদি তাকে গুনাহ থেকে বিরত রাখে তাহলে ওয়াজিব ও জরুরি। আবার কেউ কেউ বলেন, [ফিরে আসুক বা নাই আসুক] যতদিন পর্যন্ত সে অপরাধ প্রকাশ করবে, তাকে ছেড়ে দেবে। আর যখন তার সাথে দেখা হবে, তখন চেহারাকে ক্রোধান্বিত ও ক্ষুব্ধ করে রাখবে।
তিনি এখানে যে অপরাধী তার অপরাধকে প্রকাশ করে, তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া সুন্নত হওয়ার বিষয়ে কোনো ইখতেলাফ বা মতবিরোধ উল্লেখ করেন নি। তার সাথে কথাবার্তা ছেড়ে দেয়াতে সে গুনাহ থেকে ফিরে আসুক বা নাই আসুক তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে ছেড়ে দেয়া ওয়াজিব কিনা? এ বিষয়ে ইমামদের মধ্যে একাধিক মতামত পরিলক্ষিত। কেউ কেউ বলেন, কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দিতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, যদি তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া দ্বারা সে গুনাহ হতে ফিরে আসে তখন তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেবে, অন্যথায় নয়।
হাফেয ইবনে হাজার রহ. ফাতহুল বারীতে বলেন, অধিকাংশের মতে ফাসেক ব্যক্তিকে সালাম দেয়া যাবে না এবং বিদ‘আতিকে সালাম দেয়া যাবে না।
ইমাম নববী রহ. বলেন, যদি সালাম দিতে বাধ্য হয়, যেমন- যদি সালাম না দেয়, তাহলে দুনিয়াবি অথবা দীনি কোনো ক্ষতির আশংকা করে, তখন সালাম দেবে। একই কথা আল্লামা ইবনুল আরাবী রহ. ও বলেন, তবে তিনি বলেন, সালাম দেয়ার সময় এ কথা নিয়ত করবে যে সালাম আল্লাহর নামসমূহ হতে একটি নাম। আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার উপর পাহারাদার।
মুহাল্লাব রহ. বলেন, যারা অপরাধ করে তাদের সালাম না দেয়ার রীতি-নীতি চলমান পদ্ধতি। অনেক আহলে ইলমগণ বিদ‘আতিদের সম্পর্কে এ ধরনের সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। এ ছাড়া অনেক হানাফী আলেমগণ, অপরাধী বলতে তাদের বুঝান, যারা মানবতা ও স্বাভাবিক সংস্কৃতি বিরোধী অপরাধ করে। যেমন, যে ব্যক্তি অধিক উপহাস করে, খেল-তামাশায় লিপ্ত থাকে, অশ্লীল কথা-বার্তা বলে, মেয়েদের দেখার জন্য রাস্তায় বসে থাকে ইত্যাদি।
আল্লামা ইব্ন রুশদ বর্ণনা করেন, ইমাম মালেক রহ. বলেন, প্রবৃত্তির পূজারীদের সালাম দেবে না। আল্লামা ইব্ন দাকীকুল ঈদ রহ. বলেন, তাদের সালাম না দেয়া, তাদের শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যেই হবে এবং তাদের থেকে দায়মুক্তির জন্য হবে।
ইমাম বুখারি রহ. স্বীয় সহীহে বলেন,
অধ্যায়: পরিত্যাগ করা
আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর বাণী ‘কারো জন্য তার ভাইকে তিন দিনের বেশি সময় ছেড়ে দেয়া হালাল নয়’। এ কথা বলার পর, তিনি তিন দিনের বেশি ছেড়ে দেয়া হারাম হওয়া বিষয়ে তিনটি হাদিস বর্ণনা করেন। তারপর তিনি বলেন,
(অধ্যায়: যে অন্যায় করে, তাকে ছেড়ে দেওয়া বৈধ হওয়া প্রসঙ্গে)
আর কা‘ব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর সাথে যুদ্ধ অংশ গ্রহণ করা হতে বিরত থাকেন তখন তিনি বলেন, পঞ্চাশ রাত পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আমাদের সাথে কথা-বার্তা বলতে নিষেধ করেন।
তারপর ইমাম বুখারি অনুমতি চাওয়া অধ্যায়ে বলেন,
অধ্যায়: ‘যে ব্যক্তি অপরাধীকে সালাম দেয় না এবং তার তাওবা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তার সালামের উত্তর দেয় না এবং কখন অপরাধীর তাওবা প্রকাশ পাবে?’।
আর আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা’ বলেন, মদ্যপানকারীকে তোমরা সালাম দেবে না। তারপর তিনি কা‘ব ইবন মালেক রহ. এর হাদিসের কিছু অংশ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আমাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন। আর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর দরবারে আসতাম এবং তাকে সালাম দিতাম এবং মনে মনে চিন্তা করতাম আমার সালামের উত্তর নিতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর ঠোট-দ্বয় নড়া-চড়া করল কিনা? এভাবে পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হল।
আল্লামা তাবারী রহ. বলেন, অপরাধীদের সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া বিষয়ে কা‘ব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র হাদিসটি একটি মূলনীতি।
ইমাম বুখারি রহ. বিষয়টি খুব ভালোভাবে বিবৃত করেছেন। তিনি যেভাবে আলোচনা করেন, তাতে দুনিয়াবি বিষয়ে ছেড়ে দেয়া এবং দীনি বিষয়ে ছেড়ে দেয়া উভয়ের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট হয়। কারণ, তিনি এ আলোচনার প্রথম শিরোনামে দুনিয়াবি বিষয়ে ছেড়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করেন। আর তা তিন দিনের বেশি হওয়া হারাম। তারপর তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিরোনামে দীনি বিষয়ে ছেড়ে দেয়ার বিধান আলোচনা করেন। আর তা হল, অপরাধীদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পরিত্যাগ করা, তাদের সাথে কথা-বার্তা ও উঠা-বসা ছেড়ে দেওয়া। আর এ কথা স্পষ্ট, সত্যিকার তাওবা ছাড়া তার জন্য নির্ধারিত কোনো সময় নেই ।
সালাম মুসাফাহা ও অনুমতি বিষয়ে আল্লাম ইবনে আব্দুল কাবীর কাব্যসমূহ:
وكن عالمًا إن السلام لسنة
وردك فرض ليس ندبًا باوطد
ويجزئ تسليم امرئ من جماعة
وردفتى منهم عن الكل يا عدي
وتسليم نزروالصغير وعابر
السبيل وركبان على الضد يد
وإن سلم المأمور بالرد منهم
فقد حصل المسنون إذ هو مبتد
وسلم إذا ما قمت من حضرة امرئ
وسلم إذا ما جئت بيتك تقتد
وافشاؤك التسليم يوجب محبة
من الناس مجهولاً ومعروفًا اقصد
وتعريفه لفظ السلام مجوز
وتنكيره أيضًا على نص أحمد
وقد قيل نكره وقيل تحية
كالميت والتوديع عرف كردد
وسنة استئذانه لدخوله
على غيره من أقربين وبعد
ثلاثًا ومكروه دخول لهاجم
ولا سما من سفرة وتبعد
ووقفته تلقاء باب وكوة
فإن لم يحب يمضي وإن يخف يزدد( )
وتحريك نعليه وإظهار حسه
لدخلته حتى لمنزله اشهد
وإن نظر الإنسان من شق بابه
بلا إذنه إن يفقأ عينيه لم يد( )
وسيان من درب ومن ملك ناظر
ومن كوة أو من جدار مشيد
ولو مع إمكان الدفاع بدونه
وفقد النسا أو كون محرم معتد
ولا تحذف الأعمى وقال أبو الوفا
بلى إن يكن يسمع ليحذف ويصدد
وكل قيام لا لوال وعالم
ووالده أو سيد كرهه أمهد
وصافح لمن تلقاه من كل مسلم
تناثر خطاياكم كما في المسند
وليس لغير الله حل سجودنا
ويكره تقبيل الثرى بتشدد
ويكره منك الانحناء مسلمًا
وتقبيل رأس المرء حل وفي اليد
وحل عناق للملاقي تدينا
ويكره تقبيل الفم افهم وقيد
ونزع يد ممن يصافح عاجلا
وأن يتناجى الجمع ما دون مفرد
وأن يجلس الإنسان عند محدث بسر
وقيل احضر وأن يأذن اقعد
ومرأى عجوز لم ترد وصفاحها
وخلوتها اكره لا تحيتها اشهد
وتشميتها واكره كلا الخصلتين للـ
شباب من الصنفين بعدي وأبعد
ويحرم رأي المرد مع شهوة فقط
وقيل ومع خوف وللكره جود
ويكره تسليم على متشاغل
بذكر وقرآن وقول محمد
خطيب وذي درس ومن يبحثون في
العلوم وذي وعظ لنفع الموحد
مكرر فقه والمؤذن بعده الـ
مصلى وذي طهر لفعل تعبد
ودع آكلا مع ذي التغوط ثم من
يقاتل للأعداء في حرب جحد( )
অর্থ: জেনে রাখ, সালাম দেয়া অবশ্যই সুন্নাত। আর সালামের উত্তর দেয়া ফরয, সুন্নত নয়। কোন জামাত হতে একজনে সালাম দেয়াই যথেষ্ট। তাদের মধ্য যে কোন একজনের উত্তর দেয়াও যথেষ্ট হে ভাই। কম, ছোট, পথচারী ও আরোহী ব্যক্তি তার বিপরীত লোককে সালাম দেবে। যাকে সালামের উত্তর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সে যদি সালাম দেয়, তখন সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। যখন তুমি হবে শুরুতে সালামদাতা। যখন তুমি মানুষের মজলিস থেকে উঠবে তখন সালাম দেবে। আর যখন তুমি তোমার ঘরে প্রবেশ কর, তখনও সালাম দাও। সালামকে বেশি বেশি প্রসার করা দ্বারা পরিচিত ও অপরিচিত সব মানুষের মহব্বত লাভ করবে। সালামকে আলিফ-লামসহ দেয়া বৈধ আবার আলিফ-লাম ছাড়াও দেয়া জায়েয আছে ইমাম আহমদের বর্ণনা মতে। কেউ কেউ আলিফ-লাম ছাড়া সালাম দেয়াকে মৃত লোকের সালাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর বিদায়ের সময় সালাম মা‘রেফা আলিফ-লাম বিশিষ্ট হবে; সালামের উত্তরের মত। আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে অনুমতি নেয়ার উদ্দেশ্যে তিনবার সালাম দেয়া সুন্নত। সফর থেকে আগমনের পর বা কোন দূরের অবস্থান থেকে অনুমতি ছাড়া হঠাৎ করে কারো ঘরে প্রবেশ করা মাকরূহ। তুমি তাদের দরজা বা জানালার সামনে দাড়াবে যদি অনুমতি না দেয় তাহলে ফিরে আসবে, আর যদি অনুমতি পাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে আবারও সালাম দেবে। পাদুকা নড়-চড় করা ও গলায় আওয়াজ করে, ঘরে প্রবেশ করা, আরও অধিক উত্তম। যদি কোনো ব্যক্তি দরজার ছিদ্র দিয়ে অনুমতি ছাড়া তাকায়, তখন যদি তার চোখে আঘাত করে, তাতে কোন দিয়্যত দিতে হবে না। .... শাসক, আলেম, পিতা, অভিভাবক ছাড়া কারও জন্য দাঁড়ানো মাকরূহ। কোন মুসলিমের সাথে তোমার সাক্ষাত হলে তার সাথে মুসাফাহা কর, তাতে তোমাদের গুনাহগুলো ঝরে পড়বে যেমনটি বর্ণিত; মুসনাদে। আল্লাহ ছাড়া কারো জন্য সেজদা করা হালাল নয়, আর মাটি চুম্বন করা কঠিনভাবে মাকরূহ। সালাম দেয়ার সময় মাথা ঝুঁকানো নিষিদ্ধ। কোন মানুষের মাথা ও হাতে চুমু দেয়া বৈধ। যার সাথে তোমার সাক্ষাত হবে তার সাথে কোলাকুলি করবে। তবে ভালোভাবে মনে রাখবে মুখে চুমু দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যার সাথে মুসাফাহা করবে, তার থেকে দ্রুত হাত বের করে আনা এবং একজনকে বাদ দিয়ে অন্যরা কানাগুশা করা মাকরূহ। যে ব্যক্তি কোনো গোপন কথা বলছে, তার কাছে গিয়ে বসা মাকরূহ। কেউ কেউ বলেন, তুমি উপস্থিত হয়ে অনুমতি চাইবে, যখন অনুমতি দেবে তখন বসবে। কোন বুড়ো মহিলাকে দেখার বিষয়টি বর্ণিত হয়নি, আর তার সাথে মুসাফাহা করা, তার সাথে একান্ত হওয়া মাকরূহ। তবে তাদের সালাম ও হাঁচির উত্তর দেয়া মাকরূহ নয়। আর যদি যুবক হয় তখন এ দুটি কর্ম তাদের ক্ষেত্রেও মাকরূহ। কামাতুর অবস্থা কোন কিশোরের দিকে তাকানো হারাম। আর কেউ কেউ বলেন, আশংকা থাকা অবস্থায় তাদের দিকে তাকানো উচিত নয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকিরে মশগুল, কুরআন তিলাওয়াতে ব্যস্ত, হাদিস অধ্যয়নে ব্যস্ত, তাকে সালাম দেয়া মাকরূহ। খতিব, পাঠদানকারী, গবেষণা কাজে লিপ্ত ও যারা মুসলিমদের উপকারার্থে ওয়াজ করছে এবং ফিকহ চর্চা করছে তাদের সালাম দেয়া মাকরূহ। মুয়াজ্জিন যে আযান দিচ্ছে, নামাযি ও ইবাদতের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করছে, তাদের সালাম দেয়াও মাকরূহ। কাউকে খেতে দেখলে তাকে সালাম দেয়া যাবে না এবং পায়খানা-পেশাব খানায় লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া যাবে না এবং যে ব্যক্তি যুদ্ধের ময়দানে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তাদের সালাম দেয়া যাবে না।
যয়নব বিনতে জাহাশ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’, সুফিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’ কে ইয়াহূদী বলে সম্বোধন করলে প্রায় দুই মাস পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। অনুরূপভাবে এক লোক বিনা প্রয়োজনে একাধিক ঘর নির্মাণ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ সে ঘর ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে না দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কোনো প্রকার কথা-বার্তা বলেন নি। এক লোক তার দেহকে যা‘ফরান দ্বারা রঙ করলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তা ধুয়ে তার দাগ না উঠানো পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা পরিহার করেন।
এক লোককে রেশমের জুব্বা পরিধান করতে দেখে, তা খুলে ফেলে দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
এক লোককে স্বর্ণের আংটি পরিধান করতে দেখে, তা খুলে ফেলে দেয়া পর্যন্ত তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
সূনানে আবু-দাউদ, তিরমিযী ও মুস্তাদরাকে হাকেমে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এক ব্যক্তিকে দেখলেন, সে দুটি লাল কাপড় পরিধান করছে। এ কারণে তিনি তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দেন।
অনুরূপভাবে সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণ যারা যাদের থেকে গুনাহ প্রকাশ পায়, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের তাওবা কবুল না হত বা তাদের তাওবা প্রকাশ না পেত, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দিতেন। আল্লামা ইবনু আব্দিল কাওয়ী রহ. বলতেন,
وهجران من أبدى المعاصي سنة
وقيل إذا يردعه أوجب واكد
وقيل على الإطلاق ما دام معلنا
ولاقه بوجه مكفهر معربد
অর্থ: যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে অপরাধ করে, তার সাথে সম্পর্ক ছেড়ে দেয়া সুন্নত। কেউ কেউ বলেন, তা যদি তাকে গুনাহ থেকে বিরত রাখে তাহলে ওয়াজিব ও জরুরি। আবার কেউ কেউ বলেন, [ফিরে আসুক বা নাই আসুক] যতদিন পর্যন্ত সে অপরাধ প্রকাশ করবে, তাকে ছেড়ে দেবে। আর যখন তার সাথে দেখা হবে, তখন চেহারাকে ক্রোধান্বিত ও ক্ষুব্ধ করে রাখবে।
তিনি এখানে যে অপরাধী তার অপরাধকে প্রকাশ করে, তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া সুন্নত হওয়ার বিষয়ে কোনো ইখতেলাফ বা মতবিরোধ উল্লেখ করেন নি। তার সাথে কথাবার্তা ছেড়ে দেয়াতে সে গুনাহ থেকে ফিরে আসুক বা নাই আসুক তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে ছেড়ে দেয়া ওয়াজিব কিনা? এ বিষয়ে ইমামদের মধ্যে একাধিক মতামত পরিলক্ষিত। কেউ কেউ বলেন, কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই তার সাথে কথা-বার্তা বলা ছেড়ে দিতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, যদি তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া দ্বারা সে গুনাহ হতে ফিরে আসে তখন তার সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেবে, অন্যথায় নয়।
হাফেয ইবনে হাজার রহ. ফাতহুল বারীতে বলেন, অধিকাংশের মতে ফাসেক ব্যক্তিকে সালাম দেয়া যাবে না এবং বিদ‘আতিকে সালাম দেয়া যাবে না।
ইমাম নববী রহ. বলেন, যদি সালাম দিতে বাধ্য হয়, যেমন- যদি সালাম না দেয়, তাহলে দুনিয়াবি অথবা দীনি কোনো ক্ষতির আশংকা করে, তখন সালাম দেবে। একই কথা আল্লামা ইবনুল আরাবী রহ. ও বলেন, তবে তিনি বলেন, সালাম দেয়ার সময় এ কথা নিয়ত করবে যে সালাম আল্লাহর নামসমূহ হতে একটি নাম। আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার উপর পাহারাদার।
মুহাল্লাব রহ. বলেন, যারা অপরাধ করে তাদের সালাম না দেয়ার রীতি-নীতি চলমান পদ্ধতি। অনেক আহলে ইলমগণ বিদ‘আতিদের সম্পর্কে এ ধরনের সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। এ ছাড়া অনেক হানাফী আলেমগণ, অপরাধী বলতে তাদের বুঝান, যারা মানবতা ও স্বাভাবিক সংস্কৃতি বিরোধী অপরাধ করে। যেমন, যে ব্যক্তি অধিক উপহাস করে, খেল-তামাশায় লিপ্ত থাকে, অশ্লীল কথা-বার্তা বলে, মেয়েদের দেখার জন্য রাস্তায় বসে থাকে ইত্যাদি।
আল্লামা ইব্ন রুশদ বর্ণনা করেন, ইমাম মালেক রহ. বলেন, প্রবৃত্তির পূজারীদের সালাম দেবে না। আল্লামা ইব্ন দাকীকুল ঈদ রহ. বলেন, তাদের সালাম না দেয়া, তাদের শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যেই হবে এবং তাদের থেকে দায়মুক্তির জন্য হবে।
ইমাম বুখারি রহ. স্বীয় সহীহে বলেন,
অধ্যায়: পরিত্যাগ করা
আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর বাণী ‘কারো জন্য তার ভাইকে তিন দিনের বেশি সময় ছেড়ে দেয়া হালাল নয়’। এ কথা বলার পর, তিনি তিন দিনের বেশি ছেড়ে দেয়া হারাম হওয়া বিষয়ে তিনটি হাদিস বর্ণনা করেন। তারপর তিনি বলেন,
(অধ্যায়: যে অন্যায় করে, তাকে ছেড়ে দেওয়া বৈধ হওয়া প্রসঙ্গে)
আর কা‘ব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’ যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর সাথে যুদ্ধ অংশ গ্রহণ করা হতে বিরত থাকেন তখন তিনি বলেন, পঞ্চাশ রাত পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আমাদের সাথে কথা-বার্তা বলতে নিষেধ করেন।
তারপর ইমাম বুখারি অনুমতি চাওয়া অধ্যায়ে বলেন,
অধ্যায়: ‘যে ব্যক্তি অপরাধীকে সালাম দেয় না এবং তার তাওবা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তার সালামের উত্তর দেয় না এবং কখন অপরাধীর তাওবা প্রকাশ পাবে?’।
আর আব্দুল্লাহ ইবন ‘আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা’ বলেন, মদ্যপানকারীকে তোমরা সালাম দেবে না। তারপর তিনি কা‘ব ইবন মালেক রহ. এর হাদিসের কিছু অংশ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আমাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন। আর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর দরবারে আসতাম এবং তাকে সালাম দিতাম এবং মনে মনে চিন্তা করতাম আমার সালামের উত্তর নিতে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এর ঠোট-দ্বয় নড়া-চড়া করল কিনা? এভাবে পঞ্চাশ রাত পূর্ণ হল।
আল্লামা তাবারী রহ. বলেন, অপরাধীদের সাথে কথা-বার্তা ছেড়ে দেয়া বিষয়ে কা‘ব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র হাদিসটি একটি মূলনীতি।
ইমাম বুখারি রহ. বিষয়টি খুব ভালোভাবে বিবৃত করেছেন। তিনি যেভাবে আলোচনা করেন, তাতে দুনিয়াবি বিষয়ে ছেড়ে দেয়া এবং দীনি বিষয়ে ছেড়ে দেয়া উভয়ের মাঝে পার্থক্য স্পষ্ট হয়। কারণ, তিনি এ আলোচনার প্রথম শিরোনামে দুনিয়াবি বিষয়ে ছেড়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করেন। আর তা তিন দিনের বেশি হওয়া হারাম। তারপর তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিরোনামে দীনি বিষয়ে ছেড়ে দেয়ার বিধান আলোচনা করেন। আর তা হল, অপরাধীদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পরিত্যাগ করা, তাদের সাথে কথা-বার্তা ও উঠা-বসা ছেড়ে দেওয়া। আর এ কথা স্পষ্ট, সত্যিকার তাওবা ছাড়া তার জন্য নির্ধারিত কোনো সময় নেই ।
সালাম মুসাফাহা ও অনুমতি বিষয়ে আল্লাম ইবনে আব্দুল কাবীর কাব্যসমূহ:
وكن عالمًا إن السلام لسنة
وردك فرض ليس ندبًا باوطد
ويجزئ تسليم امرئ من جماعة
وردفتى منهم عن الكل يا عدي
وتسليم نزروالصغير وعابر
السبيل وركبان على الضد يد
وإن سلم المأمور بالرد منهم
فقد حصل المسنون إذ هو مبتد
وسلم إذا ما قمت من حضرة امرئ
وسلم إذا ما جئت بيتك تقتد
وافشاؤك التسليم يوجب محبة
من الناس مجهولاً ومعروفًا اقصد
وتعريفه لفظ السلام مجوز
وتنكيره أيضًا على نص أحمد
وقد قيل نكره وقيل تحية
كالميت والتوديع عرف كردد
وسنة استئذانه لدخوله
على غيره من أقربين وبعد
ثلاثًا ومكروه دخول لهاجم
ولا سما من سفرة وتبعد
ووقفته تلقاء باب وكوة
فإن لم يحب يمضي وإن يخف يزدد( )
وتحريك نعليه وإظهار حسه
لدخلته حتى لمنزله اشهد
وإن نظر الإنسان من شق بابه
بلا إذنه إن يفقأ عينيه لم يد( )
وسيان من درب ومن ملك ناظر
ومن كوة أو من جدار مشيد
ولو مع إمكان الدفاع بدونه
وفقد النسا أو كون محرم معتد
ولا تحذف الأعمى وقال أبو الوفا
بلى إن يكن يسمع ليحذف ويصدد
وكل قيام لا لوال وعالم
ووالده أو سيد كرهه أمهد
وصافح لمن تلقاه من كل مسلم
تناثر خطاياكم كما في المسند
وليس لغير الله حل سجودنا
ويكره تقبيل الثرى بتشدد
ويكره منك الانحناء مسلمًا
وتقبيل رأس المرء حل وفي اليد
وحل عناق للملاقي تدينا
ويكره تقبيل الفم افهم وقيد
ونزع يد ممن يصافح عاجلا
وأن يتناجى الجمع ما دون مفرد
وأن يجلس الإنسان عند محدث بسر
وقيل احضر وأن يأذن اقعد
ومرأى عجوز لم ترد وصفاحها
وخلوتها اكره لا تحيتها اشهد
وتشميتها واكره كلا الخصلتين للـ
شباب من الصنفين بعدي وأبعد
ويحرم رأي المرد مع شهوة فقط
وقيل ومع خوف وللكره جود
ويكره تسليم على متشاغل
بذكر وقرآن وقول محمد
خطيب وذي درس ومن يبحثون في
العلوم وذي وعظ لنفع الموحد
مكرر فقه والمؤذن بعده الـ
مصلى وذي طهر لفعل تعبد
ودع آكلا مع ذي التغوط ثم من
يقاتل للأعداء في حرب جحد( )
অর্থ: জেনে রাখ, সালাম দেয়া অবশ্যই সুন্নাত। আর সালামের উত্তর দেয়া ফরয, সুন্নত নয়। কোন জামাত হতে একজনে সালাম দেয়াই যথেষ্ট। তাদের মধ্য যে কোন একজনের উত্তর দেয়াও যথেষ্ট হে ভাই। কম, ছোট, পথচারী ও আরোহী ব্যক্তি তার বিপরীত লোককে সালাম দেবে। যাকে সালামের উত্তর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সে যদি সালাম দেয়, তখন সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। যখন তুমি হবে শুরুতে সালামদাতা। যখন তুমি মানুষের মজলিস থেকে উঠবে তখন সালাম দেবে। আর যখন তুমি তোমার ঘরে প্রবেশ কর, তখনও সালাম দাও। সালামকে বেশি বেশি প্রসার করা দ্বারা পরিচিত ও অপরিচিত সব মানুষের মহব্বত লাভ করবে। সালামকে আলিফ-লামসহ দেয়া বৈধ আবার আলিফ-লাম ছাড়াও দেয়া জায়েয আছে ইমাম আহমদের বর্ণনা মতে। কেউ কেউ আলিফ-লাম ছাড়া সালাম দেয়াকে মৃত লোকের সালাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর বিদায়ের সময় সালাম মা‘রেফা আলিফ-লাম বিশিষ্ট হবে; সালামের উত্তরের মত। আত্মীয়-স্বজন বা অন্য কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে অনুমতি নেয়ার উদ্দেশ্যে তিনবার সালাম দেয়া সুন্নত। সফর থেকে আগমনের পর বা কোন দূরের অবস্থান থেকে অনুমতি ছাড়া হঠাৎ করে কারো ঘরে প্রবেশ করা মাকরূহ। তুমি তাদের দরজা বা জানালার সামনে দাড়াবে যদি অনুমতি না দেয় তাহলে ফিরে আসবে, আর যদি অনুমতি পাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে আবারও সালাম দেবে। পাদুকা নড়-চড় করা ও গলায় আওয়াজ করে, ঘরে প্রবেশ করা, আরও অধিক উত্তম। যদি কোনো ব্যক্তি দরজার ছিদ্র দিয়ে অনুমতি ছাড়া তাকায়, তখন যদি তার চোখে আঘাত করে, তাতে কোন দিয়্যত দিতে হবে না। .... শাসক, আলেম, পিতা, অভিভাবক ছাড়া কারও জন্য দাঁড়ানো মাকরূহ। কোন মুসলিমের সাথে তোমার সাক্ষাত হলে তার সাথে মুসাফাহা কর, তাতে তোমাদের গুনাহগুলো ঝরে পড়বে যেমনটি বর্ণিত; মুসনাদে। আল্লাহ ছাড়া কারো জন্য সেজদা করা হালাল নয়, আর মাটি চুম্বন করা কঠিনভাবে মাকরূহ। সালাম দেয়ার সময় মাথা ঝুঁকানো নিষিদ্ধ। কোন মানুষের মাথা ও হাতে চুমু দেয়া বৈধ। যার সাথে তোমার সাক্ষাত হবে তার সাথে কোলাকুলি করবে। তবে ভালোভাবে মনে রাখবে মুখে চুমু দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যার সাথে মুসাফাহা করবে, তার থেকে দ্রুত হাত বের করে আনা এবং একজনকে বাদ দিয়ে অন্যরা কানাগুশা করা মাকরূহ। যে ব্যক্তি কোনো গোপন কথা বলছে, তার কাছে গিয়ে বসা মাকরূহ। কেউ কেউ বলেন, তুমি উপস্থিত হয়ে অনুমতি চাইবে, যখন অনুমতি দেবে তখন বসবে। কোন বুড়ো মহিলাকে দেখার বিষয়টি বর্ণিত হয়নি, আর তার সাথে মুসাফাহা করা, তার সাথে একান্ত হওয়া মাকরূহ। তবে তাদের সালাম ও হাঁচির উত্তর দেয়া মাকরূহ নয়। আর যদি যুবক হয় তখন এ দুটি কর্ম তাদের ক্ষেত্রেও মাকরূহ। কামাতুর অবস্থা কোন কিশোরের দিকে তাকানো হারাম। আর কেউ কেউ বলেন, আশংকা থাকা অবস্থায় তাদের দিকে তাকানো উচিত নয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকিরে মশগুল, কুরআন তিলাওয়াতে ব্যস্ত, হাদিস অধ্যয়নে ব্যস্ত, তাকে সালাম দেয়া মাকরূহ। খতিব, পাঠদানকারী, গবেষণা কাজে লিপ্ত ও যারা মুসলিমদের উপকারার্থে ওয়াজ করছে এবং ফিকহ চর্চা করছে তাদের সালাম দেয়া মাকরূহ। মুয়াজ্জিন যে আযান দিচ্ছে, নামাযি ও ইবাদতের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করছে, তাদের সালাম দেয়াও মাকরূহ। কাউকে খেতে দেখলে তাকে সালাম দেয়া যাবে না এবং পায়খানা-পেশাব খানায় লিপ্ত ব্যক্তিকে সালাম দেয়া যাবে না এবং যে ব্যক্তি যুদ্ধের ময়দানে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তাদের সালাম দেয়া যাবে না।