সুরা যারিয়া’ত

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ وَالذَّارِيَاتِ ذَرْوًا
কসম ঝঞ্ঝাবায়ুর। [সুরা যারিয়া’ত: ১]

فَالْحَامِلَاتِ وِقْرًا
অতঃপর বোঝা বহনকারী মেঘের। [সুরা যারিয়া’ত: ২]

فَالْجَارِيَاتِ يُسْرًا
অতঃপর মৃদু চলমান জলযানের, [সুরা যারিয়া’ত: ৩]

فَالْمُقَسِّمَاتِ أَمْرًا
অতঃপর কর্ম বন্টনকারী ফেরেশতাগণের, [সুরা যারিয়া’ত: ৪]

إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَصَادِقٌ
তোমাদের প্রদত্ত ওয়াদা অবশ্যই সত্য। [সুরা যারিয়া’ত: ৫]

وَإِنَّ الدِّينَ لَوَاقِعٌ
ইনসাফ অবশ্যম্ভাবী। [সুরা যারিয়া’ত: ৬]

وَالسَّمَاء ذَاتِ الْحُبُكِ
পথবিশিষ্ট আকাশের কসম, [সুরা যারিয়া’ত: ৭]

إِنَّكُمْ لَفِي قَوْلٍ مُّخْتَلِفٍ
তোমরা তো বিরোধপূর্ণ কথা বলছ। [সুরা যারিয়া’ত: ৮]

يُؤْفَكُ عَنْهُ مَنْ أُفِكَ
যে ভ্রষ্ট, সেই এ থেকে মুখ ফিরায়, [সুরা যারিয়া’ত: ৯]

قُتِلَ الْخَرَّاصُونَ
অনুমানকারীরা ধ্বংস হোক, [সুরা যারিয়া’ত: ১০]

الَّذِينَ هُمْ فِي غَمْرَةٍ سَاهُونَ
যারা উদাসীন, ভ্রান্ত। [সুরা যারিয়া’ত: ১১]

يَسْأَلُونَ أَيَّانَ يَوْمُ الدِّينِ
তারা জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কবে হবে? [সুরা যারিয়া’ত: ১২]

يَوْمَ هُمْ عَلَى النَّارِ يُفْتَنُونَ
যেদিন তারা অগ্নিতে পতিত হবে, [সুরা যারিয়া’ত: ১৩]

ذُوقُوا فِتْنَتَكُمْ هَذَا الَّذِي كُنتُم بِهِ تَسْتَعْجِلُونَ
তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন কর। তোমরা একেই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিল। [সুরা যারিয়া’ত: ১৪]

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ
খোদাভীরুরা জান্নাতে ও প্রস্রবণে থাকবে। [সুরা যারিয়া’ত: ১৫]

آخِذِينَ مَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُحْسِنِينَ
এমতাবস্থায় যে, তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদেরকে দেবেন। নিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ, [সুরা যারিয়া’ত: ১৬]

كَانُوا قَلِيلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ
তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত, [সুরা যারিয়া’ত: ১৭]

وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত, [সুরা যারিয়া’ত: ১৮]

وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ
এবং তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক ছিল। [সুরা যারিয়া’ত: ১৯]

وَفِي الْأَرْضِ آيَاتٌ لِّلْمُوقِنِينَ
বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে, [সুরা যারিয়া’ত: ২০]

وَفِي أَنفُسِكُمْ أَفَلَا تُبْصِرُونَ
এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তোমরা কি অনুধাবন করবে না? [সুরা যারিয়া’ত: ২১]

وَفِي السَّمَاء رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ
আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযিক ও প্রতিশ্রুত সবকিছু। [সুরা যারিয়া’ত: ২২]

فَوَرَبِّ السَّمَاء وَالْأَرْضِ إِنَّهُ لَحَقٌّ مِّثْلَ مَا أَنَّكُمْ تَنطِقُونَ
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের পালনকর্তার কসম, তোমাদের কথাবার্তার মতই এটা সত্য। [সুরা যারিয়া’ত: ২৩]

هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ ضَيْفِ إِبْرَاهِيمَ الْمُكْرَمِينَ
আপনার কাছে ইব্রাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি? [সুরা যারিয়া’ত: ২৪]

إِذْ دَخَلُوا عَلَيْهِ فَقَالُوا سَلَامًا قَالَ سَلَامٌ قَوْمٌ مُّنكَرُونَ
যখন তারা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বললঃ সালাম, তখন সে বললঃ সালাম। এরা তো অপরিচিত লোক। [সুরা যারিয়া’ত: ২৫]

فَرَاغَ إِلَى أَهْلِهِ فَجَاء بِعِجْلٍ سَمِينٍ
অতঃপর সে গ্রহে গেল এবং একটি ঘৃতেপক্ক মোটা গোবৎস নিয়ে হাযির হল। [সুরা যারিয়া’ত: ২৬]

فَقَرَّبَهُ إِلَيْهِمْ قَالَ أَلَا تَأْكُلُونَ
সে গোবৎসটি তাদের সামনে রেখে বললঃ তোমরা আহার করছ না কেন? [সুরা যারিয়া’ত: ২৭]

فَأَوْجَسَ مِنْهُمْ خِيفَةً قَالُوا لَا تَخَفْ وَبَشَّرُوهُ بِغُلَامٍ عَلِيمٍ
অতঃপর তাদের সম্পর্কে সে মনে মনে ভীত হলঃ তারা বললঃ ভীত হবেন না। তারা তাঁকে একট জ্ঞানীগুণী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল। [সুরা যারিয়া’ত: ২৮]

فَأَقْبَلَتِ امْرَأَتُهُ فِي صَرَّةٍ فَصَكَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ عَجُوزٌ عَقِيمٌ
অতঃপর তাঁর স্ত্রী চীৎকার করতে করতে সামনে এল এবং মুখ চাপড়িয়ে বললঃ আমি তো বৃদ্ধা, বন্ধ্যা। [সুরা যারিয়া’ত: ২৯]

قَالُوا كَذَلِكَ قَالَ رَبُّكِ إِنَّهُ هُوَ الْحَكِيمُ الْعَلِيمُ
তারা বললঃ তোমার পালনকর্তা এরূপই বলেছেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। [সুরা যারিয়া’ত: ৩০]

قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
ইব্রাহীম বললঃ হে প্রেরিত ফেরেশতাগণ, তোমাদের উদ্দেশ্য কি? [সুরা যারিয়া’ত: ৩১]

قَالُوا إِنَّا أُرْسِلْنَا إِلَى قَوْمٍ مُّجْرِمِينَ
তারা বললঃ আমরা এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি, [সুরা যারিয়া’ত: ৩২]

لِنُرْسِلَ عَلَيْهِمْ حِجَارَةً مِّن طِينٍ
যাতে তাদের উপর মাটির ঢিলা নিক্ষেপ করি। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৩]

مُسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَ لِلْمُسْرِفِينَ
যা সীমাতিক্রমকারীদের জন্যে আপনার পালনকর্তার কাছে চিহি?ত আছে। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৪]

فَأَخْرَجْنَا مَن كَانَ فِيهَا مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
অতঃপর সেখানে যারা ঈমানদার ছিল, আমি তাদেরকে উদ্ধার করলাম। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৫]

فَمَا وَجَدْنَا فِيهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ الْمُسْلِمِينَ
এবং সেখানে একটি গৃহ ব্যতীত কোন মুসলমান আমি পাইনি। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৬]

وَتَرَكْنَا فِيهَا آيَةً لِّلَّذِينَ يَخَافُونَ الْعَذَابَ الْأَلِيمَ
যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে, আমি তাদের জন্যে সেখানে একটি নিদর্শন রেখেছি। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৭]

وَفِي مُوسَى إِذْ أَرْسَلْنَاهُ إِلَى فِرْعَوْنَ بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
এবং নিদর্শন রয়েছে মূসার বৃত্তান্তে; যখন আমি তাকে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ ফেরাউনের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৮]

فَتَوَلَّى بِرُكْنِهِ وَقَالَ سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
অতঃপর সে শক্তিবলে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ সে হয় যাদুকর, না হয় পাগল। [সুরা যারিয়া’ত: ৩৯]

فَأَخَذْنَاهُ وَجُنُودَهُ فَنَبَذْنَاهُمْ فِي الْيَمِّ وَهُوَ مُلِيمٌ
অতঃপর আমি তাকে ও তার সেনাবাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। সে ছিল অভিযুক্ত। [সুরা যারিয়া’ত: ৪০]

وَفِي عَادٍ إِذْ أَرْسَلْنَا عَلَيْهِمُ الرِّيحَ الْعَقِيمَ
এবং নিদর্শন রয়েছে তাদের কাহিনীতে; যখন আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম অশুভ বায়ু। [সুরা যারিয়া’ত: ৪১]

مَا تَذَرُ مِن شَيْءٍ أَتَتْ عَلَيْهِ إِلَّا جَعَلَتْهُ كَالرَّمِيمِ
এই বায়ু যার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলঃ তাকেই চুর্ণ-বিচুর ্ণ করে দিয়েছিল। [সুরা যারিয়া’ত: ৪২]

وَفِي ثَمُودَ إِذْ قِيلَ لَهُمْ تَمَتَّعُوا حَتَّى حِينٍ
আরও নিদর্শন রয়েছে সামূদের ঘটনায়; যখন তাদেরকে বলা হয়েছিল, কিছুকাল মজা লুটে নাও। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৩]

فَعَتَوْا عَنْ أَمْرِ رَبِّهِمْ فَأَخَذَتْهُمُ الصَّاعِقَةُ وَهُمْ يَنظُرُونَ
অতঃপর তারা তাদের পালনকর্তার আদেশ অমান্য করল এবং তাদের প্রতি বজ্রঘাত হল এমতাবস্থায় যে, তারা তা দেখেছিল। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৪]

فَمَا اسْتَطَاعُوا مِن قِيَامٍ وَمَا كَانُوا مُنتَصِرِينَ
অতঃপর তারা দাঁড়াতে সক্ষম হল না এবং কোন প্রতিকারও করতে পারল না। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৫]

وَقَوْمَ نُوحٍ مِّن قَبْلُ إِنَّهُمْ كَانُوا قَوْمًا فَاسِقِينَ
আমি ইতিপূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি। নিশ্চিতই তারা ছিল পাপাচারী সম্প্রদায়। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৬]

وَالسَّمَاء بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই ব্যাপক ক্ষমতাশালী। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৭]

وَالْأَرْضَ فَرَشْنَاهَا فَنِعْمَ الْمَاهِدُونَ
আমি ভূমিকে বিছিয়েছি। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে সক্ষম। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৮]

وَمِن كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর। [সুরা যারিয়া’ত: ৪৯]

فَفِرُّوا إِلَى اللَّهِ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
অতএব, আল্লাহর দিকে ধাবিত হও। আমি তাঁর তরফ থেকে তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট সতর্ককারী। [সুরা যারিয়া’ত: ৫০]

وَلَا تَجْعَلُوا مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
তোমরা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্য সাব্যস্ত করো না। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী। [সুরা যারিয়া’ত: ৫১]

كَذَلِكَ مَا أَتَى الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّن رَّسُولٍ إِلَّا قَالُوا سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُونٌ
এমনিভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের কাছে যখনই কোন রসূল আগমন করেছে, তারা বলছেঃ যাদুকর, না হয় উম্মাদ। [সুরা যারিয়া’ত: ৫২]

أَتَوَاصَوْا بِهِ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
তারা কি একে অপরকে এই উপদেশই দিয়ে গেছে? বস্তুতঃ ওরা দুষ্ট সম্প্রদায়। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৩]

فَتَوَلَّ عَنْهُمْ فَمَا أَنتَ بِمَلُومٍ
অতএব, আপনি ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। এতে আপনি অপরাধী হবেন না। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৪]

وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَى تَنفَعُ الْمُؤْمِنِينَ
এবং বোঝাতে থাকুন; কেননা, বোঝানো মুমিনদের উপকারে আসবে। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৫]

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৬]

مَا أُرِيدُ مِنْهُم مِّن رِّزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَن يُطْعِمُونِ
আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৭]

إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
আল্লাহ তা'আলাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৮]

فَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذَنُوبًا مِّثْلَ ذَنُوبِ أَصْحَابِهِمْ فَلَا يَسْتَعْجِلُونِ
অতএব, এই যালেমদের প্রাপ্য তাই, যা ওদের অতীত সহচরদের প্রাপ্য ছিল। কাজেই ওরা যেন আমার কাছে তা তাড়াতাড়ি না চায়। [সুরা যারিয়া’ত: ৫৯]

فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا مِن يَوْمِهِمُ الَّذِي يُوعَدُونَ
অতএব, কাফেরদের জন্যে দুর্ভোগ সেই দিনের, যেদিনের প্রতিশ্রুতি ওদেরকে দেয়া হয়েছে। [সুরা যারিয়া’ত: ৬০]