মুমিন আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না

প্রাণী হিসেবে মানুষ চতুর, জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেক সম্পন্ন অতীব সুন্দর ও শ্রেষ্ঠ। আবার অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের জীবন পরিচালনাপদ্ধতিও আলাদা ও ভিন্ন। মানুষ বিপদে পড়লে অন্য মানুষ সাহায্য করে, অসুখ করলে অন্য একজন মানুষ তার চিকিৎসা করেন, অন্য কেউ তার সেবা করেন। অর্থাৎ বিপদাপদে একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে সাহায্য-সহযোগিতা করে, যা অন্য প্রাণীদের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না। তার পরও মানুষ বিপদে পড়ে অস্থির হয়। সেখান থেকে কেউ পরিত্রাণের উপায় খোঁজেন, নিজেকে উদ্ধার করেন।
আবার কেউ কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলেন। এভাবেই কিছু কিছু মানুষ একজীবনে বারবার সমস্যা ও সঙ্কটের সম্মুখীন হয়। আবার কিছু মানুষ সমস্ত জীবন আরাম-আয়েশে কাটিয়ে দেন, তবে তাদের সংখ্যা নিতান্তই কম। বরং হতাশায় নিমজ্জিত মানুষের সংখ্যাই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি। কেননা বেশির ভাগ মানুষ পৃথিবীতে তার আগমনের উদ্দেশ্যের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে পড়েন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেনÑ ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন; যেন পরীক্ষা করে দেখতে পারেন কাজকর্মে তোমাদের মধ্যে কে সর্বোত্তম; তিনি মহাশক্তিমান ক্ষমা দানকারী।’ (সূরা মুলক : ০২)।
কাজেই দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী পরীক্ষার জীবন মাত্র। এ জীবনে অভাব-অনটন, হতাশা-বঞ্চনা, বিপদ-আপদ, সঙ্কট-সমস্যা সবই থাকবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। তবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। বিপদে পড়ে সঙ্কটে আবর্তিত হয়ে মানুষ একেবারে নিঃশেষ হওয়ার উপক্রম হয়। রোগে-শোকে বিহ্বল হয়ে হতাশায় দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য হয়ে উদভ্রান্ত ও নিরাশ্রয় হয়ে জীবনের পথ হারিয়ে একেবারে বিপন্ন হয়ে পড়েন। খুনখারাবি করে জীবনকে কলঙ্কময় করে তোলেন। ভাবেন, তার জন্য শোধরানোর আর কোনো রাস্তাই খোলা নেই। এ অবস্থায় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মানুষ ধ্বংস হতে বাধ্য। আল্লাহ বলেন ‘আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’ কাজেই আশাহতদের চরম আশ্রয়স্থল হচ্ছে ইসলাম।
স্রষ্টা তার সমস্ত সৃষ্টির জীবন পরিচালনাপদ্ধতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন পবিত্র কুরআনের সূরা মুমিনে। আল্লাহ বলেনÑ ‘কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে, যিনি পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ। পাপ ক্ষমাকারী, তাওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা ও সামর্থ্যবান। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তার দিকে হবে প্রত্যাবর্তন।’ (সূরা মুমিন : ২-৩)।
এই পদ্ধতির বাইরে মানুষ যখনই এসে পড়েছে তখনই মানুষ হতাশার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। আর সে কারণেই হয়তো প্রার্থিব বা ইহজাগতিক জীবনে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, স্বয়ং নবী-রাসূলগণও বিপদ, ভয় ও সঙ্কটমুক্ত থাকতে পারেননি। আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ সা: বলেন, ‘সবচেয়ে অধিক বালা-মুসিবতে পতিত হয়েছেন নবী-রাসূলগণ, তারপর তাঁদের নিকটব্যক্তিবর্গ।’ আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর এ বক্তব্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, মানুষের জীবনে বিপদাপদ হচ্ছে ধৈর্য ও আস্থার পরীক্ষা।
অনেক মানুষই আল্লাহপ্রদত্ত জীবনবিধান ব্যতিরেকে তাদের জীবন পরিচালনাপদ্ধতি নিজেদের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে। কাজেই পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই মানুষ নির্ঝঞ্ঝাট থাকতে পারে না। ফলে বহু ব্যক্তি, জাতি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় বিপদে পড়েছে, সঙ্কটে আবর্তিত হয়েছে। কেউ সঙ্কট কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন, আবার কেউ ধ্বংস হয়ে গেছেন। হজরত আদম আ: সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে বেহেশতে থাকার পর ভুল করলেন এবং সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য তাঁরা পৃথিবীতে আগমন করলেন। আল্লাহ নির্দেশ দিয়ে বললেনÑ ‘আমি হুকুম করলাম তোমরা… অতঃপর তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়েত আসে তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে তার ওপর না কোনো ভয় আসবে, না তারা কোনো চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে।’ (সূরা বাকারা : ৩৮)।
এত বড় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন কি হয়নি? অবশ্যই হয়েছে, মানুষ হেদায়েতপ্রাপ্ত হয়েছে এবং বিপদ ও সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে। স্বয়ং আল্লাহর নবী হজরত ইব্রাহিম আ:, হজরত আইয়ুব আ:, হজরত ইউনুস আ: এমনকি শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ সা: এবং অগণিত মুমিন-মুসলিম বিপদে পড়েছেন। কখনো কখনো হতাশায় ভুগেছেন। কেন এই বিপদ? কেন এই হতাশা? আল্লাহ বলেনÑ ‘এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষয়ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে, তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।’ (সূরা বাকারা : ১৫৫)।
যেকোনোভাবেই মানবজীবনে সঙ্কট নেমে আসুক না কেন তার থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে একাগ্রচিত্তে বিশ্বাস করা যে, আমার যা কিছু ঘটছে তা সবই আমাকে পরীক্ষা করার জন্য ঘটছে। সেজন্য ধৈর্যের সাথে সেগুলোকে মোকাবেলা করাই হচ্ছে হতাশাকে পাশকাটিয়ে চলার পথ। এরই সমর্থনে আল্লাহপ্রদত্ত জীবনবিধানে দৃপ্ত ভাষায় উচ্চারিত হয়েছে, আল্লাহ বলেনÑ ‘যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তারই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।’ (সূরা বাকারা : ১৫৬)। যখনই মানুষ ভাববে তার ওপর সংঘটিত বিপদ তারই পরীক্ষার জন্য তখন তার কাছে কোনো বিপদকে আর বিপদই মনে হবে না।
বিভিন্ন কারণেই মানুষ বিপদে-সঙ্কটে অস্থির হয়ে ওঠে। জ্ঞান লোপ পেতে থাকে, মানসিক ও শারীরিকভাবে জীবনটা বিষিয়ে ওঠে। অনেক সময় মানুষ তার জীবন অবসানের ভয়ে বিচলিত হতে থাকে। এ অবস্থায় কেউ কেউ স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করতেও দ্বিধা করেন না। অর্থনৈতিক সঙ্কট, সামাজিক ঘৃণা, তাচ্ছিল্য, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, পারিবারিক অস্থিরতা, শারীরিক অসুস্থতা, পরাজয়ের গ্লানি ইত্যাদিতে মানুষ এমনই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, ইমান নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আল্লাহ বলেন ‘হে মুসলমানগণ তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।’ (সূরা বাকারা : ১৫৩)।
মুসলমানদের জন্য বিপদ ও সঙ্কট থেকে মুক্তির প্রধান শর্ত হচ্ছে নামাজ ও সবর বা ধৈর্য। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছেÑ যখনই মহানবী সা:কে কোনো বিষয় চিন্তিত করে তুলত তখনই তিনি নামাজ পড়া শুরু করতেন। অতএব নামাজ হচ্ছে বিপদ থেকে মুক্তি লাভের অন্যতম সোপান।
অনেক সময়ই বিপদ, সমস্যা, সঙ্কট মানুষের কৃতকর্মের ফল; যা তাকেই ভোগ করতে হয়। সেই কৃতকর্মের জন্য মানুষ একবারও আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয় না। রাসূল সা: ঘোষণা করেছেন ‘তার চেয়ে হতভাগ্য আর কে আছে যে কদরের রাত্রি পেল আর নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে পারল না।’ বিশেষ বিশেষ রাতে ও দিনে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করার নিয়ম রয়েছে, আর তা হচ্ছে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে।
পবিত্র কুরআনে বিশেষ কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে। এসব ঐতিহাসিক ঘটনার দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, এমন সব কঠিন বিপদ থেকে আল্লাহ মুসলিমদেরকে সাহায্য করেছেন যে, ওই রকমভাবে সাহায্য করা আল্লাহ ছাড়া দুনিয়ার কোনো শক্তির পক্ষেই সম্ভব নয়। সেসব কঠিন দুঃসময় ও বিপদে মুসলমানেরা যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন, তা আমাদের অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।
হজরত ইউনুস আ: রাগ করে ফিরে গিয়েছিলেন এবং মাছের খাদ্য হয়ে সমুদ্রের অন্ধকারে পড়ে রইলেন; অবশেষে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দোয়া করলেন। পবিত্র কুরআনে এসেছেÑ ‘অতঃপর তিনি অন্ধকারের মধ্যে আহ্বান করলেন, তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। তুমি নির্দোষ, আমি গুনাহগার। অতঃপর আমি তার আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনভাবে বিশ্ববাসীদের মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭-৮৮)। রাসূল সা: বলেন, ‘মাছের পেটে ইউনুস আ: পঠিত দোয়া যেকোনো উদ্দেশ্যে যেকোনো মুসলমান পাঠ করবে, তার দোয়া কবুল হবে।’ ( কুরতুবি)।
হতাশা থেকে মুক্তির উল্লেখযোগ্য নিদর্শন পাওয়া যায় হজরত আইয়ুব আ:-এর ক্ষেত্রে। সাত বছর তিনি রোগাক্রান্ত থাকার কারণে শরীর থেকে মাংস খসে পড়েছিল। স্ত্রী-কন্যা-পুত্র সবাই তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি একাই রাস্তার পাশে আঁস্তাকুড়ে পড়ে রইলেন। তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে আইয়ুব আ:? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর করলেনÑ সত্তর বছর ধরে যে আরাম-আয়েশ ভোগ করেছি তার তুলনায় সাত বছর কিছুই নয়। আইয়ুব আ:-এর এ কৃতজ্ঞতা ছিল ধৈর্য বা সবরের প্রতীক। আল্লাহ বলেন ‘স্মরণ করুন আইয়ুব আ:-এর কথা, যখন তিনি তার পালনকর্তাকে আহ্বান করে বলেছিলেন, আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও শ্রেষ্ঠ দয়াবান। অতঃপর আমি তার আহ্বানে সাড়া দিলাম এবং তার পরিবারবর্গকে তার কাছে ফিরিয়ে দিলাম আর তাদের সাথে তার সমপরিমাণ আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশত, আর এটা ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশ…।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৩-৮৪)।
আল্লাহ আইয়ুব আ:-এর দোয়া কবুল করার পর আইয়ুব আ:কে নির্দেশ করা হলো, তুমি পা দিয়ে মাটিতে আঘাত করো; তিনি আঘাত করলে ঝরনার সৃষ্টি হলো। সেই ঝরনার পানি খাওয়া ও গোসল করার সাথে সাথেই আইয়ুব আ:-এর স্বাস্থ্যের উন্নতি হলো, তিনি স্ত্রী-পুত্র-কন্যা ফিরে পেলেন।
নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে হজরত ইব্রাহিম আ:কে বাঁচানোর মতো তৎকালীন সময়ে এক আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তিই ছিল না। ইব্রাহিম আ:কে আগুনের মধ্যে ফেলে দেয়া হলে তিনি দোয়া করলেন। আল্লাহ পাক সেই দোয়া কবুল করে আগুনকে নির্দেশ দিলেন ‘আমি বললাম, হে অগ্নি তুমি ইব্রাহিমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও।’ (সূরা আম্বিয়া : ৬৯)। ঐতিহাসিক বর্ণনায় পাওয়া যায়, হজরত ইব্রাহিম আ: অগ্নিকুণ্ডে সাত দিন জীবিত ছিলেন। তিনি বলেন, এই সাত দিন আমি যে সুখ-শান্তি পেয়েছি তা সারাজীবনেও আর সম্ভব হয়নি।’ (মাজহারি)।
এসব নিদর্শন হচ্ছে মুসলমানদের জন্য দৃষ্টান্ত। হতাশা থেকে মুক্তি লাভের নিমিত্তে মুসলমানদের জন্য রয়েছে তাকওয়া, পরহেজগারি, নামাজ ও ধৈর্য। এ সবই যথেষ্ট। মুসলমানেরা চূড়ান্ত বিপর্যয়ে পড়েছিলেন বদরের প্রান্তরে। ইসলামের ইতিহাসে বদরের যুদ্ধের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এ যুদ্ধের জয়-পরাজয়ের ওপর নির্ভর করছিল মুসলমানদের ইজ্জত-সম্মান, আভিজাত্য ও ইসলামের ভবিষ্যৎ। মাত্র ৩১৩ জন মুজাহিদ নিয়ে ১০০০ জন শত্রুর মোকাবেলা করা ছিল সত্যিই কঠিন। এই কঠিন বিপদে আল্লাহ মুসলমানদেরকে সাহায্য করলেন। পবিত্র কুরআন বলছেÑ ‘বস্তুত আল্লাহ বদরের যুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল। কাজেই আল্লাহকে ভয় করতে থাকো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো।’ (সূরা ইমরান : ১২৩)।
সুতরাং স্ব স্ব অবস্থানে থেকে মুসলমান যদি তার দায়িত্ব যথাযথ ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী পালন করে, তবে মুসলমানদের জন্য যেকোনো হতাশা থেকে মুক্তি অসম্ভব কিছু নয়। হাদিসে এসেছে ‘অভাব-অনটনের সময় সচ্ছলতার জন্য দোয়া করে রহমতপ্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা করা সর্ববৃহৎ ইবাদত।’(তিরমিজি)। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেন ‘যে ব্যক্তি দিনের শুরুতে আয়াতুল কুরসি এবং সূরা মুমিনের প্রথম তিন আয়াত পর্যন্ত পাঠ করবে, সেদিন সে ব্যক্তি যেকোনো কষ্ট ও অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে।’ (ইবনে কাসির)।
পৃথিবীর যাবতীয় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রেই হতাশা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার শিক্ষা দেয়া হয়। হতাশায় নিমজ্জিত মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আবিষ্কার করা হয়েছে কোয়ান্টাম মেথড। নৈরাশ্য থেকে মুক্তি লাভের উপায় হিসেবে উদ্ভাবন করা হয়েছে যোগবেয়ামসহ হাল আমলের নানান কলাকৌশল। যে কোয়ান্টাম মেথড ও মেডিটেশন অনুশীলনে জীবনের পথ পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়, সেই কোয়ান্টাম মেথডের বেশির ভাগ জুড়ে রয়েছে ধর্মীয় বিধিবিধান এবং তা মেনে চলার উপায়-উপকরণ। যদি তাই হয়; তবে কেন সমাজে ধর্মীয় অনুভূতি সৃষ্টিতে এত আপত্তি?
অনৈতিক মূল্যবোধ আর মাদকাসক্ত প্রতিকারে শুধু নয়, হতাশাকে প্রতিরোধেও ধর্মের প্রচার-প্রসার দরকার সবার আগে। সুস্থ জীবনে থাকতে চাইলে ধর্মীয় মূল্যবোধে নাক সিটকানোর কোনো অবকাশ নেই, সে কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে। সেজন্যই সুস্থ জীবন মানেই ধর্মীয় অনুভূতিসম্পন্ন জীবন, এর বিকল্প অন্য কিছুই নয়।